আমি একটি ভােরের প্রতীক্ষায় আছি
সকালের সােনা রােদ যখন ছড়িয়ে পড়বে
শিশিরে ভেজা ঘাসকে মুক্তো বানাতে।
দোয়েল পাখি মিষ্টি কণ্ঠে গান গাইবে
মসজিদ থেকে ভেসে আসবে-
আসসালাতু খাইরুন মিনাল নাউম।
আমি একটি দিনের অপেক্ষায় আছি
যখন পূর্বাভাস ছাড়াই ঝপ করে বৃষ্টি
নামবে।
কিশােরী বালিকা সেই বৃষ্টিতে ভিজে জবুথবু
হয়ে
মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে ভয়ে থাকবে।
কদম গাছের সােনা বরণ ফুল তরুণীর
খোঁপায় শােভা পাবে।
বিকালের ছায়া ছায়া আলােয়
হাঁটতে বের হবে তরুণের দল
আড্ডাবাজির আড্ডাখানায়
চায়ের তুফান ছুটাবে।
সবুজ ঘাসে ঘুড়ি উড়াবে দুরন্ত কিশাের
হাট থেকে বাড়ি ফিরবে কর্মক্লান্ত
কৃষক, শ্রমিক, মুটে ও মজুর।
সূর্য ডুব দেয়ার পর রক্তিম হবে আকাশ
গরুর দল নিয়ে উচ্চস্বরে শব্দ করতে করতে
ঘরে ফিরবে রাখাল বালক।
শাঁখ বাজার শব্দ শােনা যাবে
গন্ধ ভেসে আসবে ধূপ ধুনাের।
শিশু কিশােরদের উচ্চকণ্ঠে পড়ার
শব্দ ভেসে আসবে গৃহস্ত বাড়ি থেকে।
হেঁসেল থেকে মা বলবে, কি রে তাের
পড়ার শব্দ শুনি না কেন?
জানি কালের পরিক্রমায় অনেক কিছু
হারিয়ে গেছে জীবন থেকে।
স্মার্ট টিভি, স্মার্ট মােবাইল
ফেসবুক, হােয়াটস অ্যাপ
জুড়ে দিয়েছে আত্মকেন্দ্রিকতা।
দুরন্ত শৈশব নেই, কৈশাের নেই
উদ্দাম তারুণ্য সেও হারিয়ে গেছে যেন।
নব নব আধুনিক সরঞ্জামের সাথে
যােগ হয়েছে আধুনিক রােগ ব্যাধি।
মানুষ যেমন অসামাজিক হয়েছে
রােগগুলােও ঠিক তেমনি যেন
কাছে আসা যাবে না, পাশে থাকা যাবে না
দূরত্ব বজায় রাখাে।
শারীরিক দূরত্বে কী হবে,
মানসিকভাবেই সবাই এখন বহু দূরত্বে।
অতীতের দিনগুলাে ফিরে পাবাে না
শত রকম কাজের ব্যস্ততা
সামাজিক মাধ্যমের অসামাজিক জীবন
আমাদের সম্পর্কগুলাে যেন নষ্ট না করে।
শিশুদের রঙ্গিন শৈশব মুছে না ফেলে,
লাল পরী, নীল পরীর গানের পরিবর্তে
গেয়ে না উঠে-দে দে পেয়ার দে।
একটি মিষ্টি দিন চাই, সমৃদ্ধ সম্পর্ক
ও সুস্থ্য জীবন চাই।
অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী হতে চাই।
Leave a Reply