সাতক্ষীরা অফিস: সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে উঠতি বয়সের ভয়ংকার গ্যাং, দিন দিন শহরের বিভিন্ন স্থানে তারা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে, যার জন্য ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষসহ অনেক অসহায় নারী। এমনই এক ভয়ঙ্কর গ্যাংলিডার হচ্ছে সোহাগ গ্যাং। সোহাগ গ্যাং এর অন্যতম সদস্য হচ্ছে রিপন হোসেন ওরফে টাওয়ার রিপন, আলামিন, আরিফ হোসেন, রাজন, জুবায়ের, বাশার, কালাম, ইমরান, রাহাত, রনি, শাহীন, তুহিন সহআরো অনেকে। তাদের বেশিরভাগই সুলতানপুর, চালতেতলা, বাটকে খালি, সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, নারীদের উত্ত্যক্ত করা, চোরাকারবারি সহ নানা অপকর্মের কর্মকাণ্ডে জড়িত। কোন এক অদৃশ্য রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা গড়ে তুলেছে তাদের অপরাধের সাম্রাজ্য। তাদের গ্যাং এতটাই অদম্য যে তাদের কর্মকাণ্ডের কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। প্রশাসন যেন তাদের কাছে নিরুপায়। গ্রামে, থানা, পুলিশ ফাঁড়ি সহ নানা জায়গায় তাদের অভিযোগ দিলেও ভুক্তভোগীরা কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। এরই ধারাবাহিকতায় গত ইং ১৬/৭/২১ তারিখে সোহাগ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী সাতক্ষীরার দহাকুলা মোড়ে ভাড়াটিয়া শহিদুল ইসলাম ও তার বোন কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় ভ্যানে রাস্তার উপরে উঠলে, শহিদুলের বোনকে দেখে তারা বিভিন্ন নোংরামি কথা বলে এবং এক পর্যায়ে তার হাত ধরে টানাটানি করে, যখন শহিদুল ইসলাম প্রতিবাদ করতে যায়, সোহাগের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের হাতে থাকা লোহার রড ,জিআই পাইপ, ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে শহিদুল কে মারতে থাকে, অবস্থা বেগতিক দেখে দহাকুলার স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে, এর পরিপ্রেক্ষিতে সোহাগ বাহিনী ফোন দিলে তাদের বাহিনীর লোক পিকআপ ভরে লোক এনে দহাকুলা মোরে মহড়া দেয়, এবং গ্রামবাসীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে, তখন ইউপি সদস্য গ্রামবাসীকে শান্ত করে, এবং সোহাগ বাহিনীকে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করে, তারা ইউপি সদস্যের কথা না শুনে তাকেও হেনস্থা করে,তারা যাকে সামনে পাই তাকে বেদম ভাবে মারতে থাকে ।পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ আসলে সোহাগ বাহিনী দ্রুত পালিয়ে যায়। সদর থানা পুলিশ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়, আহতরা তাদের চিকিৎসা নিয়ে ফিরে এসে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ করায় আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে সোহাগ বাহিনী। গত ইং ১৯/৭/২১ তারিখে ট্রলি চালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ কাজ করতে যাওয়ার সময় উক্ত সোহাগ বাহিনী তাকেও এলোপাতাড়িভাবে মারতে থাকে এবং বলে যে আমরা ইভটিজিং করি আর যাই করি তুই বাধা দেয়ার কে? অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহ কে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এতেও সোহাগ বাহিনী ক্ষান্ত হয়নি গত ২০/৭/২১ তারিখে বিকাল পাঁচটার সময় দহাকুলার বাসিন্দা আবু সহিদ পাপ্পু সাতক্ষীরা থেকে দহাকুলা আসার পথে সুলতানপুর ওয়াল ভিশন মোড় এলাকায় পৌঁছালে উৎপেতে থাকা ইভটিজার সোহাগ বাহিনী,আবু সাঈদ পাপ্পুর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে লোহাররড, জিআই পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে গুরুত্বর আহত করে। এসময় পাপ্পুর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল টি ও ভাংচুর করে ওই সন্ত্রাসী বাহিনী। আহতের ডাকচ চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসার আগেই সন্ত্রাসীরা পাপ্পুর কাছে থাকা নগদ ৩০হাজার টাকা ছিনিয়ে ঘটনাস্থ থেকে পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে আহত পাপ্পু বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন । সোহাগ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে একের পর এক অভিযোগ থানায় দাখিল হলেও তদন্ত যেন ধোঁয়াশার মত রয়েছে। অভিযোগ হলো পুলিশ প্রশাসনকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে কেন তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীসহ সচেতন নাগরিক সমাজ ,জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়, সাতক্ষীরা সদর থানা অফিসার ইনচার্জ এর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
Leave a Reply