সুমাইয়া আক্তার শিখা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুষ্টিয়ার ১১/২ অর্জুন দাস আগরওয়ালা সড়ক (RAB গলি) কোটপাড়া সড়কে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে কেয়ার স্পেশালাইজ্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেবার নামে এ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলছে গলাকাটা রমরমা বাণিজ্য। ফলে সাধারণ মানুষ টাকা খরচ করেও উপযুক্ত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে,কুষ্টিয়ার ১১/২ অর্জুন দাস আগরওয়ালা সড়ক (RAB গলি) কোটপাড়া সড়কে২০২১ সালের কেয়ার স্পেশালাইজ্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিক গড়ে ওঠে। ক্লিনিকের মালিক ও পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন ছাড়াই ক্লিনিকটি গড়ে তোলেন। তিনি ইচ্ছামতো নিয়ম-কানুন তৈরি করে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। নেওয়া হচ্ছে ইচ্ছামাফিক ফি। হাতুড়ে টেকনিশিয়ানরা অনেক ক্ষেত্রেই দিচ্ছেন মনগড়া রিপোর্ট। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কিছু ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে তাদের ছত্রছায়ায় এ অবৈধ অনুমোদনবিহীন ক্লিনিক চলছে। সরকারি কোনো লাইসেন্স নেই। প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে তাদের এ কর্মকান্ড চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই চলছে রোগী দেখা থেকে অপারেশন পর্যন্ত।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। নেই কোনো জরুরি বিভাগ,নেই রোগ নির্ণয়ের মানসম্মত যন্ত্রপাতি,পরীক্ষাগার বা ল্যাব টেকনোলজিস্ট। মাঝে মধ্যে ধার করা পার্টটাইম চিকিৎসক দিয়ে চলছে জটিল অপারেশনসহ নানা চিকিৎসা। কম বেতনের অনভিজ্ঞ নার্স,আয়া ও দারোয়ানই হচ্ছে এ ক্লিনিকের ভরসা।কম্পিউটারাইজড,পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ও অত্যাধুনিক নামে নামিদামি চিকিৎসকদের নাম সংবলিত চোখ ধাঁধানো ব্যানারসহ ডিজিটাল সাইনবোর্ডসর্বস্ব এ ক্লিনিকে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় মানুষ রোগ নিরাময়ের জন্য এসে অপচিকিৎসার জালে আটকা পড়ছেন। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সহজ-সরল অসহায় মানুষগুলো প্রতিনিয়তই তাদের পাতা ফাঁদে আটকে নিঃস্ব হচ্ছেন।ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসার কথা মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে বলা হলেও তাদের কেউ কেউ মাসে দু-একবার এসে অপারেশন করে চলে যান। এ ক্লিনিকে নিয়মিত কোনো চিকিৎসক থাকেন না। এসব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ভাঙিয়ে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। জেলা কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত মনিটরিং কিংবা জবাবদিহি নেই, নেই কোনো নজরদারি।কেয়ার স্পেশালাইজ্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালাক ডাক্তার ইমাম হোসেন ডেভিডের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার ক্লিনিকে গিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তাঁর ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থাকা রুবেল জানায়,এ বিষয় আমি কিছু বলতে পারব না। তবে ক্লিনিকের বিষয় মালিকের অনুমতি ছাড়া তিনি কোনো তথ্য দিতে চাননি। সিভিল সার্জন বলেন,বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষয়ে সরকারি নির্দেশনার মত চলতে হবে এদের কেয়ার স্পেশালাইজ্ড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোনো কাগজপত্র আছে কিনা আমরা যাচাই বাছাই করে দেখব। তিনি আরো বলেন, যদি কাগজপত্র না থাকে তাহলে এই অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে।
Leave a Reply