নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে নদ-নদীতে হু-হু করে বাড়ছে বন্যার পানি। ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। জলমগ্ন রোপা আমন ও শাকসবজি।
শুক্রবার(২৭ আগস্ট) সকালে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ১৭ এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
উজানে অতিবৃষ্টিতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় ৮ হাজার ১১০ হেক্টর রোপা আমন ও শাকসবজি জলমগ্ন হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। চারদিকে বন্যার পানি ছড়িয়ে গো-চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নদ-নদী অববাহিকার নিমাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চর প্লাবিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা ডিএমও আতিকুর রহমান জানান, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায় ১৭ সেন্টিমিটার। এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতির কারণে তার ইউনিয়নের বড়াইবাড়ী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাড়ীর চারপাশে পানি থাকায় ২হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উমর ফারুক জানান, ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের সারডোব, ছাটকালুয়া, দক্ষিণ হলোখানা এবং হেমেরকুটি গ্রামের নিচু এলাকায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।
বাড়িঘরের চারদিকে পানি ওঠায় যোগাযোগে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। হলোখানা ইউনিয়নের হেমেরকুটি মন্ডলপাড়া গ্রামের নবরুদ্দি, হাছেন আলী, জাহাঙ্গীর আলম ও এরশাদুল জানান, ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে মন্ডলপাড়া থেকে গাছবাড়ী এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১০০ একর রোপা আমনধান গত ১০/১২দিন ধরে জলমগ্ন হয়ে আছে। শ্যালো দিয়ে গাটের পয়সা খরচ করে যারা আবাদ করেছে তারা কিছুই পাবে না।
হলোখানার চন্দনপাট এলাকার ছামসুল খন্দকার, ভোলামুন্সি, এরশাদুল, সমশের ও ইয়াছিনের প্রায় আড়াই একর জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়েছে। পাঙ্গারটারী গ্রামের জহুরুল ও সামছুল জানান, ক্ষেতবাড়ী তলিয়ে যাওয়ায় গরু-ছাগলকে এখন কলাপাতা আর বাশপাতা খাওয়াচ্ছেন।
চারদিক পানি উঠায় ওয়াপদা বাঁধে গরু-ছাগল রেখেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন কমেছে। গঙ্গাধর নদীতে বল্লভের খাসে, ধরলা নদীতে সারডোবে এবং তিস্তা নদীতে ৪/৫টি পয়েন্টে ভাঙন কবলিত স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুল হক জানান, নদ-নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮ হাজার ১১০ হেক্টর জমির ফসল জলমগ্ন হয়েছে। এরমধ্যে রোপা আমন ৮ হাজার ২০ হেক্টর এবং শাক- সবজি ৯০ হেক্টর।
Leave a Reply