তুহিন হোসেন, কেশবপুর যশোর প্রতিনিধি.
কেশবপুরে গড়ভাংঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে আরেকটি বিদ্যালয়ের ভবন আছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শ্রেণিকক্ষ–সংকটে ছাত্র–ছাত্রী পড়াশোনার ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিদ্যালয়টির সুনাম থাকায় সন্তানকে এই বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে আগ্রহী অভিভাবকরা। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ–সংকটে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান।
স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, লেখাপড়ার মানবৃদ্ধিসহ অন্যান্য কার্যক্রমে ভালো করায় প্রাথমিক বিদ্যালয়টির একটি পরিচিতি আছে। যে কারণে অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের এই বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চান। এতে ভর্তির চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাত্র–ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে।
এখন বিদ্যালয়ে ১৫৫ ছাত্র-ছাত্রী আছে
এদিকে গত (৬ আগস্ট) শনিবার সকালে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নে গড়ভাংঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০:২০মিনিটে ৫ম শ্রেণির গণিত ক্লাস নেওয়ার সময় সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান (৪২) মাথায় সিলিং ফ্যান পড়ে আহত হয়েছে ।
কক্ষে ফ্যান চালিয়ে ক্লাস চলাকালীন, সময় উপরের সিলিং এর হুকে জং থাকায়, ভেঙে ফ্যানটি তাঁর মাথার উপর পড়ে, অজ্ঞান হয়ে ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হয়ে নিচে পড়ে যান সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান । এমন পরিস্থিতিতে ছাএ ছাএীর চিৎকার শুনতে পেয়ে চলে আসেন প্রধান শিক্ষক আশুতোষ নন্দী। সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও শিক্ষিকা ফারজানা ইয়াসমিন, মিলিনা পারভীন, এবং পাশ্ববর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিয়াকৎ আলী, সহ অন্যান্য শিক্ষক বৃন্দ উপস্থিতিতে, আহত শিক্ষক জিয়াউর রহমানকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ নন্দী বলেন দীর্ঘদিনের,ভবনটি অনেক পুরতন, বিল্ডিং ১৯৯৪ /৯৫ সালে নির্মাণাধীন। এবং এছাড়াও আমাদের আরো একটি প্রতিষ্ঠান আছে সেইটা সমাপনী কেন্দ্র । ছাত্র ছাত্রী বেশি থাকায়। ক্লাস নিতে আমাদের একটু সমস্যা হয়।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ ঝুকিপূর্ণ, স্থাপন প্রায় ২৫/২৬ বছর এবং এখনকার সময়ে বিদ্যালয়ের যে নাজুক অবস্থা আমার মনেহয় তৎকালীন সময়ের যারা দায়িত্বে ছিল এবং ঠিকাদারদের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তাদের অবহেলায় ও অনিয়মের ফল ভোগ করছে এখনকার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা। আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে করে আমরা একটি নতুন ভবন পেতে পারি।
এর মধ্যে ওই সহকারী শিক্ষককের মাথায় ৩ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। ২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বেড না থাকায়, তিনি বাসায় ফিরেছেন। পরবর্তীতে যশোর ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে সিটি স্কান করে, ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এছাড়াও শিক্ষক সহ এক ছাএ জুবায়ের হাতে ও পিঠে আঘাত পেয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে’ তাৎক্ষণিক আহত শিক্ষক গুরুত্ব হলেও। ছাএ জুবায়ের আক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন।
আহত জিয়াউর রহমান বলেন, আমি অসুস্থ। কপালে তিনটি সেলাই দেয়া হয়েছে তাঁর পরেও স্কুল আসছি যথাযথ ক্লাস নিচ্ছি । আমি এটি মানতে পারতেছি না। কী আজব ঘটনা! একটি সরকারি স্কুলের ফ্যান খুলে পড়ে আমি সহ শিক্ষার্থী আহত হবে, এটা ভাবা যায়? আমাদের নতুন ভবন দেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল জব্বার সদ্দার বলেন গড়ভাংঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনের সিলিং এর হুকটি মরিচা ধরে যাওয়ায়, ফ্যান টি পড়ে শিক্ষক জিয়াউর রহমান আহত হন পরবর্তীতে নতুন করে, হুক পুনরায় সংস্কার করে লাগানো হয়েছে। আরও বলেন সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান যথাযথ চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন। গড়ভাংঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটা নতুন করে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করেছি, আশা করি দ্রুত আমরা ভবনটি নতুন করে নির্মাণের তালিকাটা পাব।
Leave a Reply