মিরু হাসান বাপ্পী
বগুড়া জেলা সংবাদদাতা
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২খ্রিঃ
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর কদিন বাদেই দেবী দুর্গা আসছেন। দেবীর আগমনকে ঘিরে দেবীর প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত এখন মৃৎ শিল্পীরা। দিন রাত পরিশ্রম করে তাদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন একেকটি অসাধারণ সুন্দর প্রতিমা। বগুড়া শহরের বিভিন্ন মন্দির প্রাঙ্গনে নানা আকার আর ঢংয়ের দুর্গা দেবীর মূর্তি বানানো হচ্ছে। জেলার ১২টি উপজেলায় ৬৯০টি মন্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আর এই উৎসবকে সামনে রেখে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি যেন পুরোদমে এগিয়ে চলছে। তবে প্রতিমা নির্মাণের প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় লাভ কম হবে বলে আশঙ্কা কারিগরদের।
প্রতিমা শিল্পীরা বলেন, ‘তাড়াতাড়ি কিভাবে কাজ নামানো যায় তাই আমরা রাতদিন পরিশ্রম করছি। সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের লাভ হয় না।
বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর শাজাহানপুরে ৫৬টি, নন্দীগ্রামে ৪৬টি, শিবগঞ্জে ৬৩টি, আদমদিঘীতে ৬৫টি, সারিয়াকান্দিতে ২০টি, দুপচাঁচিয়ায় ৪২টি, ধুনটে ২৯টি, সোনাতলায় ৫০টি, শেরপুরে ৯০টি, গাবতলিতে ৭৩টি, কাহালতে ৩৬টি এবং বগুড়া সদরে ১২০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, তাদের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামি পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সে হিসেবে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবাবের দুর্গোৎসব। এবছর দেবী দুর্গা আসছেন গজে (হাতি) চড়ে যাবেন নৌকায় চড়ে। দেবীর আগমনে বিশ্ব হবে শান্তিময়, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে উদয় হবে শুভ শক্তির এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাগর কুমার রায় জানান, প্রতিটা মন্দিরে আনসার বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক থাকবে। এর পাশাপাশি নিজ দায়িত্বে প্রতিটি মন্দিরে কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাসহ সম্ভব হলে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে কম আলোকসজ্জা ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘জেলার সব কটি উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিমা তৈরিকালীন সময়ে যাতে প্রতিমার কোন প্রকার ক্ষতি না হয় সেজন্য আয়োজক কমিটিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আয়োজক কমিটির পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে টহল টিমও সতর্ক হয়ে মাঠে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে।
Leave a Reply