পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এর ওয়ার্ড বয় এর ওপর সিজার অপারেশন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওয়ার্ড বয় সিজার অপারেশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি ওষুধ। বুধবার(২৫ শে আগষ্ট) রাতে কালীশুরী ইউনিয়ন পরিষদের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার পরিচালিত নিউ লাইফ কেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের অবহেলার পর রোগীর মৃত্যুর রেশ না কাটতেই চাঞ্চল্যকর এ খবর সর্বোত্তম ছড়িয়ে পড়ায় বর্তমানে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক পরিচালনা করছেন স্বামী ও স্ত্রী (পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিক শাহাবুদ্দিন সিকদার (অবসরপ্রাপ্ত) ও শাহিনুর বেগম বেবি। শাহাবুদ্দিন সিকদারের মায়ের নাম মাজেদা বেগমের নাম অনুসারে ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠা করেন। শাহাবুদ্দিন সিকদার ও শাহীনুর বেগম দম্পতির ছেলে যুবায়ের হোসেন শাওন সমন্বয়ে কালিশুরী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ও বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ষ্টোর কিপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সুবাদে তিনি সরকারি মূল্যবান ওষুধ নিয়ে ওই ক্লিনিকে সিজার অপারেশন ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করেন। ঐ ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার থেকে গোপণ ক্যামেরায় তোলা ছবিতে দেখা যায়, সিজার অপারেশনের জন্য সরকারি সিলধারী কয়েকটি মূল্যবান ওষুধ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। অপর একটি ছবিতে দেখা যায়, রুহুল আমিন নামের এক ওয়ার্ড বয় সিজার অপারেশন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ও পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন শাহীনুর বেগম বেবী। অভিযুক্ত রুহুল আমিনের বাড়ি কুড়িগ্রামের বাসিন্দা। বাউফলের বিভিন্ন ক্লিনিকে ফোন কলে সিজার করেন এমন একজন গাইনি সার্জন ডা. জুবায়ের হোসেন বলেন,
তিনি বিভিন্ন ক্লিনিকে ওয়ার্ড বয়ের দায়িত্ব পালন করার সময় সিজার অপারেশন করেন। বর্তমানে বাউফলের বিভিন্ন ক্লিনিকে যখন সার্জন ছুটিতে থাকেন তখন জরুরী রোগীর অপারেশনের জন্য ডাক পড়ে রুহুল আমিনের এছাড়াও মাজেদা মেমোরিয়ালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে সিজার অপারেশন করেন রূহুল আমিন। বিষয়টি আমি পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শিপন ও বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি কতৃপক্ষ।
এ বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিকের পরিচালক শাহিনুর বেগম বেবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি সরকারি চাকুরি করি। আমার স্বামীসহ কয়েকজন অংশীদার ক্লিনিকটি পরিচালনা করছেন। সরকারি ওষুধ ক্লিনিকে ব্যবহার করি না। আর ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে সিজার অপারেশন করা হয় না। আমরা ফোন কলে সার্জন এনে প্রসুতির সিজার করি। আর ডা. জুবায়ের একসময় মাজেদা ক্লিনিকের সার্জন ছিলেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ তৈরি হয়। এখন আমাদের বিরুদ্ধে ডা. জুবায়ের অপপ্রচার করছেন।
উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ওয়ার্ড বয় রুহুল আমিনের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করেছি। কিন্তু সিজার অপারেশনের কোন প্রমাণ পাইনি। আর সরকারি ওষুধ ব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply