গৌতম চন্দ্র বর্মন, ঠাকুরগাঁও:পতিত জমিতে ড্রাগন, মাল্টা, পেঁপে, মসলা জাতীয় আঁদা, রসুন, হলুদ একই বাগানে চাষ করে সফল হয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর গড়েয়া ডিগ্রী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক সাদেকুল ইসলাম।
বাসার পাশে ফেলে রাখা জমিতে মাল্টা, পেঁপে ও ড্রাগন ফলের সারি সারি গাছ। ড্রাগন ফলের গাছের সাথে উর্বর মাটিতে মসলার চাহিদা পূরণে করেছেন আদা, রসুন, হলুদ চাষ। সদর উপজেলার গড়েয়া বাজার এলাকায় চোঁখ জুড়ানো এমন ফলের বাগান দেখতে এলাকার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন।
প্রভাষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘তিন বছর আগে শখের বশে পরীক্ষামূলকভাবে অল্প কিছু জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান শুরু করি। বাগানে আশানুরুপ ফল হওয়ায় পরবর্তীতে সেখানে মাল্টা গাছের চারা রোপন করি। এখন তিন বছরের মাথায় একই বাগানে মাল্টা, পেঁপে, নারিকেল, আদা, রসুন, হলুদ চাষ করেছি।’
গত ২ বছর যাবৎ মাল্টার ফলন অনেক ভালো হওয়ায় এবং মাল্টা অনেক সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন বলে জানান তিনি।
নিয়মিত পরিচর্যা, সেচ ব্যবস্থা ও জৈব সার ব্যবহারের ফলে বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে থোঁকায় থোঁকায় যেমন ফল ধরেছে, তেমনি ড্রাগন ও পেঁপে গাছেও ঝুলছে ফল। শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষিতে এমন অভাবনীয় অবদান রাখায় এলাকার অন্যান্য কৃষকরা তার কাছে নিচ্ছেন পরামর্শ। বাগানের এসব উৎপাদিত ফল জেলার চাহিদা পূরণে যেমন ভূমিকা রাখছে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, ‘জেলায় এভাবে বাগান করে অনেকে লাভবান হচ্ছে। তার সাথে এই বাগানের ফল জেলার পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষি অফিস থেকে সবসময় এসকল কৃষককে সহযোগিতা করা হচ্ছে ও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাগানটি দেখতে অনেক সুন্দর। আর এই বাগানের মাল্টা অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। তার সাথে ড্রাগন ফল, আদা, রসুন, পেপেঁ সব করেছেন তিনি। তার এই বাগান দেখে আমরাও বাগান করতে উৎসাহী। তাই সাদেকুল ভাই এর কাছে বাগান করার পরামর্শ নিতে এসেছি।’
এলাকাবাসী জানায়, সাদেকুলের বাগান থেকে আমরা মাল্টা ক্রয় করি। মাল্টা অনেক মিষ্টি। এছাড়াও উনার বাগানে আরও অনেক ফল রয়েছে যেমন পেপেঁ, ড্রাগন। বিকেলে আমরা উনার বাগানে ঘুরতে আসি। বাগানে থোঁকায় থোঁকায় মাল্টা দেখতে অনেক সুন্দর। অল্প জমিতে এক সাথে এত কিছু আবাদ করা সম্ভব তা সাদেকুল ভাই এর বাগান না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।
প্রভাষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘পতিত জমি ফেলে না রেখে সহজেই ফল বাগান করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্ররা এসব বাগান করে লাভবান হতে পারবে। ৬০ শতক জমিতে মাল্টা, পেঁপে ও ড্রাগন ফলের যৌথ বাগান করতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু গত দুই বছরে মাল্টা, ড্রাগন, আদা, পেঁপে বিক্রয় করে ইতোমধ্যে আমার কয়েক লাখ টাকা আয় হয়েছে।’
Leave a Reply