বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নওয়াব প্যালেসের অভ্যান্তরে জলাধারে থাকা কুমিরটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১৮ আগস্ট(বুধবার) সকালে বন বিভাগের বণ্য প্রাণী ব্যবস্হাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল রাজশাহীর পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে একদল কর্মী কুমিরটি গ্রহণ করেন।
বগুড়ার শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড ইনরভার্নমেন্টাল রিসোর্চের (তীর) কর্মীরা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।পরিবেশবাদী সংগঠন ” তীর’- এর উপদেষ্টা আরাফাত বলেন, বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন কুমিরটিকে তারা আপাতত তাদের রাজশাহী রেসকিউ সেন্টারে রাখবেন। পরবর্তীতে কুমিরটি কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নেওয়া হবে।
প্রায় দেড় শ’ বছর আগে বৃটিশদের কাছ থেকে ” নওয়াব” উপাধি পাওয়া আব্দুস সোবহান চৌধুরী বগুড়া শহরের সূত্রাপুর এলাকায় তাদের বসবাসের জন্য বড়ি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে যা ” নওয়াব প্যালেস” হিসাবে পরিচিতি পায়। নওয়াব পরিবারের অন্যতম সদস্য পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী চৌধুরী এই প্যালেসেই বসবাস করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ভাই ওমর আলী চৌধুরী ১৯৮৮সালে প্যালেসের ভেতরে “মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম এবং অ্যামিউজমেন্ট পার্ক” গড়ে তোলেন।আর তখন সেখানে দর্শনার্থীদের জন্য একটি জলাধারা নির্মাণ করে তাতে ঘড়িয়াল ও কুমির ছাড়া হয়। এর কিছু দিন পর মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর কানাডা প্রবাসী ছোট ছেলে হামদে আলী চৌধুরী প্যালেসে বসবাস করপন। পরবর্তীতে তিনি ও তার বড় ভাই কানাডা প্রবাসী হাম্মাদ আলী চৌধুরী মিলি ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল ওই নওয়াব প্যালেসটি বগুড়ার স্হানীয় তিন ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রি করেন।
নওয়াব প্যালেসের তিন ক্রেতার একজন বগুড়া চেম্বর অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন জানান,কুমিরটিকে তারা হস্তান্তর করার কথা জানিয়ে কিছু দিন আগে বন বিভাগের উধর্বতন কর্মকর্তাকে চিটি দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন,আমাদের এখানে কুমিরটির যথাযথ ভাবে যত্ন নেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা তাই আমরা কুমিরটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছি। তারা আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়ে আজ তাহা নিতে এসেছেন। আশাকরি বন বিভাগের ব্যবস্হাপনায় কুমিরটি আরো ভাল থাকবে।
পরিবেশবাদী সংগঠন ” তীর” -এর উপদেষ্টা আরাফাত রহমান জানান,বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্হাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল রাজশাহীর পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মী আজ বুধবার সকাল ৯ টার দিকে নওয়াব প্যালেসে আসেন। এর পর নওয়াব প্যালেসের ভেতরে জলাধার থেকে কুমিরটি জাল দিয়ে ধরে উপরে তোলা হয়। প্রায় দুই ঘন্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা কুমিরটি নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হন।
Leave a Reply