মিরু হাসান বাপ্পী
বগুড়া জেলা সংবাদদাতা
৩০ অক্টোবর ২০২২খ্রিঃ
বগুড়ার শেরপুরে শয়নকক্ষ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম নুসরাত জাহান মিলা (১৭)। রোববার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার মিজূাপুর ইউনিয়নের বিরইল যমুনা পাড়ায় বসতবাড়ির নিজ শয়ন কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহত নুসরাত জাহান মিলা উপজেলার ওই গ্রামের নাজিমুদ্দিনের মেয়ে। সে শহরের শেরপুর শেরউড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, নুসরাতের বাবা নাজিমুদ্দিন চাকরির কারণে ঢাকায় থাকেন। তাঁর মা সুফিয়া বেগমও দুইদিন আগে নাটোরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। তাই দাদির সঙ্গে বাড়িতে ছিলেন নুসরাত। প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। কিন্তু রবিবার বেলা দশটা পর্যন্ত ঘুম থেকে জেগে না উঠায় দাদি তাঁকে অনেক ডাকাডাকি করেন। এরপরও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘটনাটি প্রতিবেশিসহ আশপাশের লোকজনকে জানানো হয়। পরে তারা এসে শয়নকক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে শেরপুর থানায় সংবাদ দেন। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যান।
সূত্রটি আরও জানান, বেশকয়েকমাস আগে নুসরাতের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা সদরের এক যুবকের পরিচয় ঘটে। এমনকি সেই সূত্রে প্রথমে প্রেম এবং পরবর্তীতে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়েও করেন তারা। কিন্তু কিছুদিন যাবত তাঁদের মধ্যে বনিবনাত হচ্ছিল না। এমনকি উভয়ের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে ঘটনার রাতে মোবাইল ফোনে কথা হয় তাদের মধ্যে। একপর্যায়ে ফোনে কথা কাটাকাটিও হয়। পরবর্তীতে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায় বলে সূত্রটি জানান।
জানতে চাইলে শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সম্ভবত নুসরাত জাহান মিলা পারিবারিক কলহের কারণে ক্ষোভ ও অভিমানে নিজ শয়নকক্ষের সেলিংফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এরপরও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়া গেলেই কেবল মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা ও বলা সম্ভব হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আইনী প্রক্রিয়া শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
Leave a Reply