রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আগামী রোববারের (২৭ জুন) মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান চলাচল বন্ধের সিন্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে তাদের উত্থাপিত ১১ দফা দাবি মেনে না নিলে মঙ্গলবার (২৯ জুন) রংপুরে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে রংপুর নগরের শাপলা চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ আল্টিমেটাম ও ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেন জাতীয় শ্রমিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর মহানগর জাতীয় চার্জার রিকশা-ভ্যানচালক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা।
লিখিত বক্তব্যে তোফা বলেন, সারাদেশে একযোগে ব্যাটারিচালিত চার্জার রিকশা-ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্ত অত্যান্ত দুঃখজনক। দেশে ৮০ ভাগ মানুষ দিনমজুর, এর মধ্যে ৪০ ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে থ্রি-হুইলার, অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান চালক ও শ্রমিক। রিকশা-ভ্যান চলাচল বন্ধ করা হলে ৪০ ভাগ মানুষের পেটে লাথি মারা হবে। অনেক পরিবার পথে বসবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারকে এই ধরণের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বেকার সমস্যা চরমে উঠবে। দিশেহারা মানুষের আর্তনাদে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমরা চাই সরকার এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় এগিয়ে আসবে।
এ সময় আগামী রোববারের (২৭ জুন) মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষিত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে শ্রমিক নেতা তোফা বলেন, যদি ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হয়রানি বন্ধ না করা হয় তাহেলে মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি তুলে ধরে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় চার্জার রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বাবু, মহানগর চার্জার রিকশা-ভ্যান জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি আব্দুল মজিদ, জাতীয় রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান আনিছ, পীরগাছা উপজেলা চার্জার রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মামুন প্রমুখ।
উত্থাপিত দাবির মধ্যে রয়েছে- রংপুর মহানগরে যানজট নিরসনে বিশেষ বিশেষ স্থানে অটোরিকশা ও চার্জার রিকশা-ভ্যানের সংখ্যানুপাতে অটো পার্কিং ও চার্জার রিকশা স্ট্যান্ড স্থাপন করাসহ ফুটপাত খালি করতে হবে। নিবন্ধিত অটোরিকশা, চার্জার রিকশা-ভ্যানের ডিজিটাল নম্বর প্লেটে বারকোডের মাধ্যমে মালিক ও লাইসেন্সের সমস্ত বায়োডাটা স্থাপন করতে হবে। পুলিশি অভিযানের আগে মাইকিং করে প্রচারণা চালাতে হবে। মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ, সিটি পুলিশ ও অটোরিকশা, চার্জার রিকশা-ভ্যানের শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে নগরীতে ১৪টি চেকপোস্ট স্থাপন, শ্রমিক কল্যাণ তহবিল চালুকরণ, ভাড়া নির্ধারণ ও ভাড়ার তালিকা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আলাদা লেন নির্ধারণ করা, চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, প্রশিক্ষিতদের লাইসেন্স প্রদান, সড়কে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা, চুরি-ছিনতাসেহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শ্রমিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে ।
Leave a Reply