সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে প্রায় ১৭ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমানসহ নয়জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত ১৬ জুন সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিরা যাতে দেশত্যাগ না করতে পারে, সে জন্য ৯ জুন সংশ্লিষ্ট আদালতে একটি আবেদন করেন আইনজিবি আসাদুজ্জামান । ১৬ জুন ভার্চ্যুয়াল আদালতে ওই আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করলেও ২৩ জুন বুধবার তিনি এ সংক্রান্ত আদেশের কপি হাতে পান। দেশত্যাগে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তাঁরা হলেন, সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেন, ভান্ডাররক্ষক এ কে এম ফজলুল হক, ঢাকার সেগুনবাগিচার মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী জাহের উদ্দিন সরকার, নয়াপল্টনের মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টার ন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ও অংশীদার আব্দুর ছাত্তার সরকার, একই এলাকার মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ও অংশীদার আহসান হাবিব, ইউনিভার্সেল ট্রেড করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আসাদুর রহমান, মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক কাজী আবু বকর সিদ্দীক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইক্যুপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী এ এইচ এম আব্দুস কুদ্দুস।
সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পিপি আসাদুজ্জামান জানান, ২০১৮ সালে সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমানসহ নয়জন জাল-জালিয়াতিও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে চিকিৎসাসেবার মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা সাতক্ষীরা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে তুলে আত্মসাৎ করেন।
বিষয়টি জানতে পেরে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক ফাহিমুল হক কিসলু ও সদস্যসচিব হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তাঁরা ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেন। এরপর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন ২০১৯ সালের ৯ জুলাই তৎকালীন সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দুদক খুলনা জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন। আসামিরা হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েক দফায় সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করার পর জামিনে মুক্তি পান। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
Leave a Reply