মোঃ আলী হোসেন কলারোয়া সাতক্ষীরা থেকেঃ
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে (এখনও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে) কলারোয়ায় সরিষা আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অল্প খরচের বেশি মুনাফার এই ফসলটি হারিয়ে তাই কৃষকের মাথায় যেন হাত পড়েছে। হতাশায় ভূগছেন কৃষকরা আর ভাবছেন কী করে এবার ইরি ফসলের খরচ জোগাবেন তাঁরা।
অল্প খরচ আর শ্রমে অধিক মুনাফা হওয়ায় কলারোয়ায় সরিষার চাষ একটি জনপ্রিয় আবাদ। তাই প্রতি বছরই বেশ উৎসাহ নিয়ে কৃষকরা এই আবাদটি করে থাকেন। এবারও সেই আশায় এখানকার কৃষকরা এই ফসলটির চাষ করেছিলেন। সব কিছু ঠিকঠাক মতো হলে বর্তমানে মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ ঘটত। সেই হলুদের গালিচায় মধুলোভী মৌমাছিরা থাকত ব্যস্ত। কৃষকের দুচোখ ভরে স্বপ্নরা নাচানাচি করত।কিন্তু গেল সপ্তাহের বিরূপ আবহাওয়া পাল্টে দিয়েছে এখানকার সরিষার মাঠগুলোর দৃশ্যপট। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় সরিষার মাঠজুড়ে এখন ধ্বংসস্তূপ। কৃষকের স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। আর সেই দৃশ্য দেখে হতাশায় নিমগ্ন এলাকার কৃষক। উৎকণ্ঠিত পরবর্তী ফসল ইরিধানের আবাদের খরচ জোগানো নিয়ে।
কৃষকরা জানান, গত তিন দিনের নিম্নচাপজনিত কারণে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে তাঁদের সরিষা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। সরিষা জমির যে ফলনগুলোতে ফুল এসেছিল, সেগুলো বৃষ্টির কারণে ঝরে পড়েছে। আর যে চারাগুলো বাড়ন্ত অবস্থায় ছিল, সেগুলো ভেঙে মাটিতে মিশে গেছে। অনেক জমিতে পানি জমে থাকায় সরিষার গাছ পঁচে গেছে। যেগুলো টিকে আছে, সেগুলোও ঢলে পড়ে হলদে হয়ে গেছে।
কৃষকরা আরো জানান, সরিষা হলো তাঁদের জন্য একটি লাভজনক ফসল। বর্ষার পানি জমি থেকে সরে যাওয়ার পর খুব অল্প খরচে তারা সরিষার আবাদটা করে থাকেন। এতে পরিশ্রম খুব একটা করতে হয় না। সময়ও ব্যয় হয় খুব কম। এখানকার মাটি খুব ভাল হওয়ায় ফলনও বেশ ভালো হয়। অপরদিকে ভালো বাজারদরের কারণে ফলন বিক্রি করে অধিক মুনাফাও পান তাঁরা।
ওই মুনাফার খরচ দিয়ে তারা পরবর্তী ফসল ইরি আবাদের খরচ জোগান দিয়ে থাকেন। কুশোডাঙ্গা এলাকার কলাটুপি গ্রামের সাহাজান, রহমান, শফিকুল হোসেন, জাকির ও নাজমুল জানান, সরিষার জমি হারিয়ে তারা এখন দুই চোখে অন্ধকার দেখছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাঁরা সরকারি সহায়তা কামনা করেন।
Leave a Reply