সাপ আর হাঁস দুইজনেই একে অপরের শত্রু। হাঁস যেখানে এসে খেলা করে সাপও সেখানে এসে ঘুরে বেড়ায়। একদিন এক সাপ খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।
হঠাত দেখতে পায় একটি হাঁসকে। হাঁসকে তাড়া করে তার পিঠের উপর চড়ে বসে সাপটি। হাঁসটি ভয়ে ভয়ে পাঁড়ে ভিড়তে লাগল। হাঁস যতই পাঁড়ে ভিড়তে চায় সাপ থাকে ততই বাঁধা দেয়।
এইবার হাঁসের হঠাত মনে হল যে, যদি সে কূলে ভীড়তে চায় সাপ তাকে ছোবল দিতে পারে। তারচেয়ে ভাল সাপটিকে আশ্রয় দিয়ে চুপ করে থাকা। ভয়ে ভয়ে সারাদিন এভাবে চলে গেল। সাপটিও তার ক্লান্তি দূর হয়ে যাওয়ার পর হাঁসের পিঠ থেকে নেমে চলে গেল। সাপের উপর এইবার হাঁসের বিশ্বাস জমে গেল।
পরেরদিন আবারও ক্লান্ত হয়ে পড়লে সাপটি হাঁসের
পিটে এসে আশ্রয় নেয়। হাঁসও এইবার আর পালানোর
চিন্তা মাথায় আনছেনা। এইভাবে প্রায় প্রতিদিন সাপটি
হাঁসের কাছে এসে আশ্রয় নেয়। আর হাঁসও ভয় পায় না। এইভাবে তাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। কিন্তু হঠাত একদিন সাপটি কোন কারণে রাগান্বিত হয়ে হাঁসকে
লেজ দিয়ে আঘাত করে বসে। এরপর সাপের প্রতি
যে বিশ্বাস ছিল তা নষ্ট হয়ে গেল হাঁসের। হাঁসের এইবার
মনে হল যে, পরেরবার সাপ তাকে ছোবল দিতে পারে।
এইদিকে সাপও মনে মনে ভাবতে লাগল, আমি যে
কাজ করেছি তা ঠিক করিনি। এখন যদি সে আমাকে
ছেড়ে চলে যায় আমি আশ্রয় নিব কার পিঠে!
একদিকে হাঁস ভাবতে লাগল সে পালাবে। এখানে থাকলে ছোবল খাবে, অন্যদিকে সাপ ভাবতে লাগল
হাঁস পালাতে পারে তারচেয়ে ভাল তাকে এখনিই ছোবল দিয়ে দিই যাতে পালাতে না পারে৷ কিন্তু হাঁসের
প্রতি মায়া জমে যাওয়ায় ছোবল দিতে গিয়েও পারছে না সাপ।
একদিন হাঁসটি পালিয়ে গেল।
এইবার সাপ তাকে পাগলের মত করে খুঁজতে লাগল।
তবে আশ্রয় নেওয়ার জন্য নয়, সাপটি কিছুতেই হাসের
মায়া ছাড়তে পারছে না বলেই। অন্যদিকে হাঁসটিও সাপের মায়ায় বারবার ফিরে আসতে চায় কিন্তু ছোবল খাওয়ার ভয়ে ফিরছে না।
নোট;- বিশ্বাস যখন জমে যায় শত্রুর সাথেও আপনি
বাস করতে পারবেন। যখন কোন কারণে সে বিশ্বাস
ভেঙ্গে যায় সেখানে সম্পর্কগুলি নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
আবার কোন ঠুনকো কারণেও দীর্ঘদিনের গড়ে উঠা
বিশ্বাস ভেঙ্গে যায়।
সংগৃহীত
Leave a Reply