রিপোর্টঃ এসএম মজনু সিরাজগঞ্জ:তাঁত সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ জেলায় মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে দিশেহারা তাঁতীরা। বিদ্যুৎ স্বাভাবিক না থাকায় এ জেলার দক্ষিণাঞ্চলের বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে তাঁতশিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুৎ চালিত পাওয়ারলুম কারখানায় কমে যাচ্ছে কাপড় উৎপাদন। ফলে দিশেহারা এ অঞ্চলের শত শত তাঁত কারখানার মালিক ও শ্রমিকেরা। জানা যায়, গত মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দেয় সরকার। এনায়েতপুরের খুকনী, গোপরেখি, রুপনাই, গোপালপুর, বটতলা, বেলকুচি এবং চৌহালী উপজেলার বেতিল, খামারগ্রামসহ শাহজাদপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব এলাকায় অন্তত ৮৫ হাজার তাঁত শ্রমিকসহ এ শিল্পের সাথে জড়িত দেড় লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের জন্য চরম সমস্যায় পড়েছেন। তাঁত শিল্পই হচ্ছে এসব এলাকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। কিন্তু ঘনঘন লোডশেডিং এলাকার প্রায় পৌনে এক লক্ষ বিদ্যুৎ চালিত তাঁতের চাকা কিছুক্ষণ চালু হবার পরই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে পড়ে এসব কারখানার প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাপড় উৎপাদন ও বিপননে নানাবিধ সমস্যার শুরু হয়েছে। এনায়েতপুরের কয়েকটি তাঁত কারখানা ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকজনকে শুয়ে ঘুমাতেও দেখা যায়। শ্রমিকরা জানান, এভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে সপ্তাহ শেষে আমাদের কোন রোজগার থাকবে না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কি খেয়ে বেঁচে থাকব। দ্রুত লোডশেডিং সমস্যার সমাধান চাই। এ অবস্থা চলতে থাকলে বন্ধ হয়ে যাবে বিদ্যুৎ নির্ভর উৎপাদনমুখী এ শিল্প প্রতিষ্ঠান। কয়েকটি তাঁত কারখানার মালিক জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন বিশালভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের বিদ্যুৎ চালিত তাঁতের চাকা বন্ধ হলে পরিবার নিয়ে চরম সমস্যায় পড়তে হবে।
তারা আরও বলেন, এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হলে আমাদের অনেক ব্যবসায়ী অগ্রীম টাকা নেয়া আছে তাদের বিপদের শেষ থাকবে না। এছাড়া বেপারীদের কাছে যে কমিটমেন্ট করেছিলাম সেটি ফেল করবো। দেশের বাহিরে থেকে অর্ডার পেতাম তা বন্ধ হয়ে যাবে। এবিষয়ে খামারগ্রামের কাপড় বিক্রয় প্রতিনিধি রনজিত কুমার জানান, তাঁতের শাড়ি ও লুঙ্গিসহ কাপড় অধিক উৎপাদনে পাওয়ারলুম তাঁতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে তাঁত কারখানার মালিক শ্রমিক উভয়ই এখন মহাবিপদে রয়েছে। এ সংকট দ্রুত সমাধান চাই। এছাড়া উৎপাদনমুখী তাঁত শিল্পকে রক্ষায় লোডশেডিংয়ের আওতা মুক্ত রাখার দাবি জানাই।
Leave a Reply