——————————————————হাকিকুল ইসলাম খোকন ,সিনিয়র প্রতিনিধিঃ “স্থানীয় অর্থনীতি, স্থায়ী শক্তি” এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে ২০ জুন ২০২২,সোমবার ,ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ’ আন্তর্জাতিক স্থানীয়করণ দিবস উপলক্ষে এক আকর্ষনীয় এবং মনোজ্ঞ উপস্থাপনা যেমন- বিভিন্ন নাটিকা, গান, আবৃত্তি, পুঁথি সাহিত্য, স্থানীয় ও দেশীয় খাদ্যের প্রদর্শনীর মাধ্যমে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর মেলা কক্ষে বিশ^ স্থানীয়করন দিবস উদযাপন করে।খবর বাপসনিউজ।
লোকাল ইজ আওয়ার ফিউচার। লোকাল ফিউচার হল ‘নতুন অর্থনৈতিক’ আন্দোলন। বেশ কয়েকজন মানুষ ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পরিবেশগত কল্যাণের লক্ষ্যে লোকাল ফিউচারের অর্থনীতি প্রচার করছেন। বহুজাতিক কোম্পানীগুলো নিয়মিতভাবে একই দেশ থেকে একই পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করে। বিশ্বের লাখ লাখ অভুক্ত মানুষের ক্ষুধা নিবারণ করতে বা সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষকে খাওয়ানোর জন্য নয়, বরং বিশ্বব্যাপী বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তাদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য এই ব্যবস্থার প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করছে। গ্লোবাল ফুড সিস্টেম পৃথিবীর সবচেয়ে দূষণকারী শিল্প, যা বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০% কার্বন নিঃসরনের জন্য দায়ী। খাদ্য পণ্য দীর্ঘ দূরত্বের পরিবহন করতে খাদ্যে সংরক্ষণ ও তাজা রাখতে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় এবং শিল্পায়িত কৃষি অধিক কীটনাশক, ছত্রাকনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহার করে থাকে যার কারণে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ে। পূর্বে যুদ্ধ বিগ্রহ, বন্যা, মহামারী ইত্যাদির কারণে পণ্যমূল্যের দামবৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে গ্লোবালাইজেশনের কারণে পণ্য পরিবহনে যান্ত্রিক যান-বাহন নির্ভর কৃষি উৎপাদন ও পরিবহন ব্যবস্থার ফলে পণ্যদ্রব্যের দাম অসহনীয় পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য লোকালাইজেশন আন্দোলন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন- মোছা. শাপলা খাতুন, কনসালটেন্ট, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন- ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসন। তিনি বলেন, স্থানীয়করণ দিবসের মাধ্যমে আমরা সকলকে জানাতে চাই যে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে অনেক সম্পদ আছে, যেমন- আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর, আমাদের কিছু সুন্দর সামাজিক প্রথা ও রীতিনীতি রয়েছে; যেমন- বিনিময় প্রথা। আমাদের অর্থনীতিতে খুবই চমৎকার একটি দিক আছে, তাহলো কৃষকের হাট-বাজার, যা বাংলাদেশে বহু পুরোনো ধারণা। বাংলাদেশের এসব ইতিবাচক দিকের মাধ্যমে জলবায়ু বিপর্যয়ের ক্ষতি এবং বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসন হতে আমাদের দেশকে মুক্ত রাখতে পারব। সে লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এই দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
‘ওয়ার্ল্ড লোকালাইজেশন ডে’ আয়োজনের শুরুতে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের একটি দল নাটিকার মাধ্যমে তুলে ধরেন অস্বাস্থ্যকর খাবার জনস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি কিভাবে কৃষকের হাট-বাজারের মাধ্যমে আমাদের কৃষক এবং কৃষি অর্থনীতিকে সচল রাখতে পারি এবং বিষ মুক্ত খাবারের যোগান নিশ্চিত করতে পারি।
ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের পক্ষ হতে এক উপস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের আদিবাসি জনগোষ্ঠীর জীবন চিত্রের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। আয়োজনে আরো বেশ কিছু দিক উপস্থাপন করা হয় যেমন: যান্ত্রিক যান মুক্ত শহর, সামাজিক সম্পর্ক ও স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করা এবং মানুষের জীবনের উপর বহুজাতিক কোম্পানীর নেতিবাচক প্রভাবের লাগাম টেনে ধরা এবং জলবায়ু বিপর্যয় রোধ করা। এখন পর্যন্ত বিশে^র ৫৮টি দেশের ১৮০০ টির বেশি ব্যক্তি, সংগঠন এবং গোষ্ঠী ওঅখ-এ যোগদান করেছে। ওঅখ বিভিন্ন মহাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিদের একত্রিত করে ব্যবসায়ী নেতা এবং শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে শুরু করে কৃষক, সমাজ কর্মী এবং পরিবেশবিদগণ একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসাবে লোকালাইজেশনের তথ্য, জ্ঞান, মতামত ও সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি আদান-প্রদান করে থাকে।
এই আয়োজনে আরও সহ-আয়েজক হিসাবে ছিলেন কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন লোকাল ফিউচার।
Leave a Reply