রহমতউল্লাহ, নওগাঁপ্রতিনিধিঃ
নওগাঁ জেলার বদলগাছীতে ভুয়া কবিরাজের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে গ্রামের সহজ-সরল সাধারন মানুষ এবং নিশ্ব হচ্ছে অর্থে।
সপ্তাহে দুই দিন শনিবার ও মঙ্গলবার ভোর থেকে রাত ০৮টা পর্যন্ত ঘরের এক কোণে বসে টেবিলে মোমবাতি জ্বালিয়ে গ্লাসে পানি নিয়ে পানি দেখে রোগীর মুখে বর্ননার উপর ভরসা করে হাঁকাও কিছু কথা বলতে থাকে। এবং রোগীকে বলে এটা কি ঠিক ,কিছু রোগী মন উদাসী স্বপ্নের মত বলে হা। তখন তাকে বলে বিভিন্ন তাবিজের কথা।
গ্ৰামের সাধারণ মানুষ সাদা পোশাকে আব্রিত গোননার কথায় বেকুল হয়ে কবিরাজের ঝাড়-ফুক, পানিপড়া, আর তাবিজ-ও গাছ গাছারী দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লুটে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা এবং বূনে যায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
আর তার এ প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করছেন তারই পাতানো স্থানীয় কয়েকজন সহযোগী ও সরকার দলীয় ইউনিয়ন নেতা। তাদের কে হাঁটে বাজারে মিষ্টি চা খাওয়ে গোপনে খুশি। এবং দিয়ে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাহায্য সহযোগিতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমানের ৩য় ছেলে শামসুল ইসলাম(৪৮)। পড়ীর সহযোগিতা নিয়ে কবিরাজ বনে গেছেন বলে জানা যায়।শামসুল কবিরাজের বাসায় সপ্তাহে দুই দিন শনিবার ও মঙ্গলবারে অনেক দুর দুরান্ত থেকে গোনানার রোগী আসে। প্রথমে পাঁচ টাকায় বরতমানে ১০টাকায় রোগীর রোগ শুনে মোমবাতি জ্বালিয়ে গ্লাসে পানি দেখে দেখে রোগ নির্ণয়ের সূত্র বলতে পারেন তিনি। এবং তিনি বলেন আমার কাছে এ রোগের চিকিৎসা আছে।
তিনি বিয়ে করেনি বলে জানান। এলাকাবাসী জানায় পড়ী তাকে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন সামছুল ইসলাম কবিরাজ।তার বাবা গরুর হাট দালালি করে অনেক অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতেন।
হঠাৎ পরীর সঙ্গ নিয়ে বড় কবিরাজ বনে গিয়ে ছোট ভাই কে লেখাপড়া শিখিয়ে উচ্চ্য শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন ছোট বোনদের বিয়ে দিয়ে পিতার অভাব কে দুর করে তৃণমূল থেকে আজ কুটি টাকার মালিক । তার বড় বোনের মেয়ে কে বিয়ে দিয়ে নিজের অর্থায়নে বানিয়ে দিয়েছেন বিলাস বহুল বাড়ি।
কিনেছেন জমি জমা ও বাড়িতে নেই কোন ঔষধি গাছ,তবুও তিনি বিভিন্ন গাছ গাছারী থেকে ঔষধ তৈরী করে সকল রোগের চিকিৎসা প্রদান করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
কবিরাজ শামসুল ইসলাম করোনা,বন্ধ্যা, নারীদের সন্তান হওয়া, অল্প বয়সে চুল পাকা, প্রতিবন্ধী শিশুদের ভালো করা, প্রেমিক-প্রেমিকাকে পাওয়ে দেওয়া, জিন-ভূত তাড়ানো, যেসব নারীদের বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে হচ্ছে না, ক্যান্সার, ডায়াবেটিকস, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক, পিত্তথলিতে পাথর, প্যারালাইস, বাতের ব্যথা, হাঁপানি, সরকারী চাকুরী পাইয়ে দেওয়া পুরুষাঙ্গ হীন,সহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করেন। আর রোগের ধরন দেখে চিকিৎসার ফি নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। রোগ অনুসারে ২৫০ থেকে ১ হাজার টাকা ,বাড়ী বাঁধা তিন হাজার টাকা, গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা অর্থে সুখ বিলাসের বাড়ি তৌরী করেছেন ২০ – ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করে।
খাদাইল গ্রামের জোমেলা বেগম বলেন, গ্রামের মানুষের কাছে শুনে আমি আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য এসেছি।তিনি আরো বলেন,আমার মেয়ে ২ মাসের গর্ভবতী এবং বাচ্চাটি নষ্ট হয়েছে কোন জিন ভুতের আছর আছে কিনা কবিরাজ বলেন তোমার মেয়ের জরায়ু নেই। কি বলিব দুঃখের কথা জড়ায়ূ যদি না থাকে তাহলে কিভাবে সহবাস করে বাচ্চা ধারণ করে। কি ভাবে ঐ কবিরাজ শামসুল ইসলাম বলেন সে স্বামীর কাছে থাকতে পারবে না।
এবং আড়াইল গ্রামের মুজাহিদ হোসেন বলেন,সরকারী চাকরী হচ্ছে না,এই জন্য এসেছিলাম। কবিরাজ বলল যদি বিশ্বাস করিস তাহলে সামনে শনিবারে ঔষধ নিয়ে যাবি,সরকারী চাকুরী হবে। বদলগাছীর শহিদুল ইসলাম বলেন,বিয়ে হচ্ছে না কবিরাজের কাছে জানতে চাইলে কবিরাজ শনিবারে তৈল পড়া দিতে চেয়েছে।
এ ব্যাপারে কবিরাজ শামসুল ইসলামের শিক্ষাবিদ্যা কত দূর জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভাবের কারণে খুব বেশী পড়াশুনা করতে পারি নি।পরী আমাকে বিয়ে করার পর থেকে কয়েক বছর থেকে বাড়িতে সর্বরোগের ঝাড়-ফুক, বিভিন্ন গাছ-গাছারী আর পানি পড়া, তেল পড়া দিয়ে মানুষের রোগ ভালো করে আসি। কবিরাজি সনদ দেখতে চাইলে বলেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন ও মেম্বার মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন রোগীর দেখার জন্য।এক সময়ের দরিদ্র পরিবার বর্তমানে এলাকার বিলাস বহুল বাড়ি, জমি জমা ও টাকার মালিক সামছুল ইসলাম কবিরাজ। তিনি পদ্দীতে ছিল ফকির। তিনি মাদারের গানের একজন দল নেতা ও। গোপন সূত্রে জানা যায় সামছুল ইসলাম তিনি মুসলমান হয়ে ও প্রতি অমাবশ্যার রাতে অর্থের লোভে বিভিন্ন করনী, কুফুরী,কালি মাশনার কালি পুঁজা করে থাকে। আবার দুই ঈদে জোব্বা পড়িয়ে ঈদের মাঠে সামনে সাড়িতে ও দেখা যায়।
তবে সাধারণ মানুষ এখনো বুঝতে পারেনি শামসুল হক কবিরাজি পুরোটাই প্রতারণা। প্রতিনিয়তই প্রশাসনের চোখের সামনে এ প্রতারণা হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টি এইচ ও কানিজ ফারহানার কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন।,আমি কিছুক্ষন আগে জানতে পেরেছি,আমরা আমাদের মতো করে খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়াছমিনের মোবাইল ফোনে অবগত করলে তিনি বলেন প্রমান মিললে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply